নির্বাচন নিয়ে খেলাধুলা করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে: আমির খসরু

অনলাইন ডেস্ক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যাশা একটি নির্বাচিত সংসদ সরকারের মাধ্যমে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার গঠন করে বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে। এই মালিকানা হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে সে যাকে ইচ্ছা তাকে নির্বাচিত করবে। এটা নিয়ে কেউ খেলাধুলা করলে তাদের শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে। আপনারা ভোট না নিয়ে নতুন নতুন বয়ান সৃষ্টি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছেন। তা কাজ করবে না। ভোটে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। এখানে অন্য কোনো কিছু করার সুযোগ নেই।

ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একটি মহল আন্দোলনের মালিকানা ছিনতাই করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, আন্দোলন নিয়ে যে তথ্য আমাদের কাছে আছে তা প্রকাশ করলে আপনারা লজ্জা পাবেন। বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, বিএনপি নেতা হাম্মাম কাদের চৌধুরী।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা আন্দোলনে যাবেন, নতুন নতুন বয়ান শোনা যাচ্ছে। আন্দোলন হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। বয়ান দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করে দেখবেন। আমরা এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি একা এই আন্দোলন করেনি। সমস্ত মানুষ মিলে আমরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি। আন্দোলন এবং আন্দোলনের মালিকানা কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মালিকানার হিসাব যদি করতে হয়, আমরা (বিএনপি) যেই হিসাব দিব আপনারা লজ্জা পাবেন। মালিকানা নিয়ে টানাটানি করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে।

ছাত্রদল দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতনের পরেও রাজপথে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রদল রাস্তায় থেকে জীবন দিয়ে পঙ্গু হয়ে, মামলা খেয়ে, পালিয়ে বেরিয়ে, ব্যবসা চাকরি হারিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে। এই ছাত্রদল, যারা এরশাদকে বিতাড়িত করেছে, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গুম, খুনের শিকার হয়েও কেউ বাড়ি ফিরে যায়নি। তিনি বলেন, আমরা চাই না আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটি বিভক্তি সৃষ্টি হোক। আমরা চাই আন্দোলনকে নিয়ে দেশে ঐক্য সৃষ্টি হোক। আর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে চিরজীবনের জন্য দেশ থেকে যে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে সেই ফ্যাসিস্ট ও তার প্রেতাত্মা যাতে আর ফিরে আসতে না পারে।

আমির খসরু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। এর বাইরে আর কোনো দায়িত্ব নেই। আর যে সংস্কারের গল্প করা হচ্ছে সেগুলো হবে আগামী সংসদে। অর্থাৎ নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যত সংস্কার প্রয়োজন তা করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে, তখন ছাত্রদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আর তখনই ছাত্রদলসহ সব দলই সরকার পতনে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি, ছাত্রদল, ছাত্র এবং ১৮ কোটি মানুষের নেতৃত্ব ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের সকল দেশপ্রেমিক ছাত্র আন্দোলন শেষ করে বাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত গিয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও তাই করেছে। কিন্তু যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কথা বলে কোটায় গিয়ে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, এ সময় এটা হবে না। দেশের মানুষের প্রত্যক্ষ ভোটে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।

Related Articles

Back to top button