সরকারের ব্যর্থতার বড় মাপকাঠি জুলাই আন্দোলনে শহীদদের খুনিদের বিচার করতে না পারা : সারজিস আলম

অনলাইন ডেস্ক: বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় প্যারামিটার হবে জুলাই গণআন্দোলনে নিহত শহীদদের হত্যাকারীদের বিচার করতে না পারা। গত ১৬ বছরে আমরা একটা স্বৈরাচার সিস্টেমকে চালু রাখতে সহযোগিতা করেছি, এ দায় আমাদের সবার।

গতকাল শুক্রবার সকালে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিজেদের কর্মকাণ্ডের কারণে পুলিশ ইমেজ সংকটে রয়েছে। নিজেদের সুনামের সঙ্গে কাজ করে সেই ইমেজ ফিরিয়ে আনতে হবে। আন্দোলনে যারা রাজপথে শহীদ হয়েছেন তাদের হত্যার বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশ চাইলে সবকিছু করা সম্ভব। তাদের প্রভাব মাঠপর্যায়ে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিছুদিনের জন্য সহযোগিতার জন্য এসেছে, আবার চলে যাবে। পুরো বাংলাদেশে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য পুলিশ যে ভূমিকা পালন করতে পারে আর কেউ সেটা পারে না। যাদের কাছে প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি-তাদের কাছেই চাওয়াগুলো বেশি হয়। আমরা এখনো আপনাদের প্রতি আস্থা হারায়নি। আমরা আস্থাটা রাখতে চাই, পারব কি না সেটা আপনাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা চাই, আমাদের শহীদ পরিবার যারা রয়েছে, সেক্টর একটা জায়গা থেকে তাদের দায়িত্ব নেওয়াটা খুব টাফ (কঠিন)। আমরা তা-ও চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রত্যেক জেলা পর্যায়ে যদি, প্র-ে ত্যক জেলায় যেসব শহীদ পরিবার রয়েছে, আহত যোদ্ধারা রয়েছে-জেলা প্রশাসন এবং পুলিশসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা মিলে যদি তাদের দায়িত্ব আমরা ভাগ করে নিই, আমাদের জন্য তা সহজ হয়ে যায়। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শহীদ পরিবার থেকে এক জন করে হলেও চাকরির ব্যবস্থা করি, আমাদের দায়িত্বগুলো সহজ হয়ে যায়। আপনাদের অনুরোধ করব, আপনাদের কাজের মধ্য দিয়ে আপনারা তাদের পাশে থাকবেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের কথা দিতে চাই-জীবনের বিনিময়ে হলেও এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষা করার জন্য আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

অনুষ্ঠানে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. হাসানুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. তারিকুল ইসলাম, আশরফা খাতুন ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান বক্তৃতা করেন। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫৮ শহীদ পরিবারের প্রতিটি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।

Related Articles

Back to top button