শাবনূরকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন কনক চাঁপা

অনলাইন ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের প্রতিভাধর ও দর্শকনন্দিত নায়িকা শাবনূর। বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় নৈপুণ্যতা, উচ্চারণ, দৈহিক সৌন্দর্য দিয়ে দর্শক হৃদয় জায়গা করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। ‘স্বপ্নের নায়িকা’ খ্যাত এই অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তায় এখনো এতটুকু ভাটা পড়েনি।

বাংলা সিনেমার সফল এই অভিনেত্রী জীবনের ৪৬ বছরে পা দিলেন। ৪৬তম জন্মদিনেও শাবনূরকে স্মরণ করছেন তার অনুরাগীরা। সামাজিকমাধ্যমে প্রিয় নায়িকার ছবি, শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিচ্ছেন ভক্তরা।

এছাড়া শাবনূরকে নিয়ে নিজেদের মনের কথা জানিয়েছেন সহকর্মীরাও। তাদেরই একজন সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা।

মঙ্গলবার দুপুরে শাবনূরকে নিয়ে একটি দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। পাঠকদের জন্য কনক চাঁপার সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময় শিল্পীর নাম যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না! তার অভিনয় শৈলী, উচ্চারণ, দৈহিক সৌন্দর্য, চাঁদপানা মুখশ্রী গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ। তার রেশ এখনো কাটেনি, কাটবেও না কখনও।

এই ‘শাবনূর’ এপিসোড থেকে দর্শক বেরুতেও চায়নি, চাইবেও না। কারণ এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।

আমি বলা যায় প্রথম থেকেই তার জন্য গাইছি। আশ্চর্যজনক কথা যে তার সঙ্গে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। আমি আমার মতো গেয়েছি তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন । কিন্তু যখন পিকচারাইজেশন দেখেছি তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে এটা আমি গেয়েছি, মনে হয়েছে এটা যেন তারই কণ্ঠ!

এই যে একাকার হয়ে যাওয়া এই ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই। তিনি আসলে আমাদের কবরীর পরে ভার্সেটাইল যাকে বলে সেই উঁচুমানের মহানায়িকা। সিরিয়াস অভিনয়, হাসির অভিনয়, ছটফটে দুরন্ত কিশোরীর অভিনয় সবই দুর্দান্ত তবে তার ভয়ংকর সুন্দর চোখে যখন অশ্রু ঝরে তখন একটা কথাই মাথায় আসে ‘ফুল নেব না অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল!’

আগেই বলেছি ব্যক্তিগত জীবনে তার সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয়েছে। আমার রেকর্ডিং স্টুডিও আর তার কর্মক্ষেত্র আলাদা জায়গায় হওয়াতেই এমন হয়েছে। কিন্তু যখন তাকে দেখেছি, খেয়াল করেছি খুব সহজ সরল তার উপস্থিতি। তার কাঁচভাঙ্গা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধ হয় এভাবে অনুভব হয় । সাধারণ ভাবে দেখা সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে, এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কিভাবে!

আমার ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে গিয়েছিলাম তার বাসায়। তখন তার আন্তরিক আতিথিয়েতা দেখে আমি মুগ্ধ! তখনও আমি নিরাভরণ শাবনূরকে দেখে চমকে উঠেছি তার বিরল সৌন্দর্য ও চোখের চাহনিতে।

আমি খুবই গর্বিত তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময়ই আমি সঙ্গে ছিলাম। তার অভিনীত একশো ভাগের নিরানব্বই ভাগ গানই আমার গাওয়া। আমাদের দুইদেহ এক প্রাণ বলা যায়।

জীবনে কখনো কোন চ্যানেলকে বলিনি আমাকে এমন একটা অনুষ্ঠান দেন। কিন্তু কয়েকটি চ্যানেলে স্বপ্রনোদিত হয়ে বলেছি শাবনূর ও আমাকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম সাজাতে, কিন্তু কোন চ্যানেলই গা করে নাই। এই বাংলাদেশে মূল্যায়ন পাওয়া।

খুবই কঠিন তবে আমার বিশ্বাস একদিন আমার গান আর শাবনুরের অভিনয়ের সমন্বয় নিয়ে গবেষণা হবে তখন হয়তো তা দেখার জন্য হয়তো কোন একজন থাকবো না।

আমি আমাদের এই মহানায়িকার আনন্দিত সুখী সুদীর্ঘ জীবন কামনা করছি। শাবনূরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার পক্ষ থেকে রইলো অগণন শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

Related Articles

Back to top button