জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেবে সরকার

অনলাইন ডেস্ক: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেছেন, ‘আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রতিহত না করতে পারি, তাহলে এ জলবায়ু পরিবর্তন এ সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেবে। আমরা যে সভ্যতা গড়ে তুলেছি

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেছেন, ‘আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রতিহত না করতে পারি, তাহলে এ জলবায়ু পরিবর্তন এ সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেবে। আমরা যে সভ্যতা গড়ে তুলেছি তা অত্যন্ত সংকটে নিমজ্জিত। জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় এ সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এ সরকার চায় দেশটা যেন সবুজ দেশ হয়। আমরা আইনের শাসন চাই। পরিবেশ, নদী রক্ষায় আইন প্রয়োগ করব। পরিবেশ ধ্বংস, মানুষ ধ্বংস, শিশু ধ্বংস সবকিছুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের এ শিক্ষাই দিয়েছে।’

গতকাল পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক নাগরিক সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’র (ধরা) উদ্যোগে জলবায়ু ন্যায্যতা রক্ষায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের কৃষি, খাদ্য ও জীবন-জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। আমরা দেখেছি এবার ইলিশ মাছের ডিম কম এসেছে। এর পেছনে কারণ হিসাবে দেখা গেছে সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। নদীগুলো ভরাট-দখল হয়ে যাওয়ার ফলে মাছের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পরিবেশ বিনষ্ট করে হাওরের ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজনে এ রাস্তাগুলো আমাদের ভাঙতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রডাকশনের চেয়ে আমাদের কৃষির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে এগুলো আমাদের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার আমাদের জন্য ক্ষতিই বয়ে আনবে। তাই অবশ্যই টেকসই ভবিষ্যতের জন্য আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাকে এখন আর দেখি না। এরই মধ্যে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে এবং এজন্য আমাদের কোনো দায় নেই। পশ্চিমা ও উন্নত দেশগুলো জলবায়ু উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। যেসব দায়ী দেশ উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে, তাদেরই ক্ষতিপূরণ করতে হবে। আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

কি নোট স্পিকার লিডি ন্যাকপিল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি ও খাদ্যকে প্রভাবিত করছে, যা অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করছে পৃথিবীর দক্ষিণের দেশগুলোয়। আমরা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সমস্যা সমাধানের জন্য চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় তহবিল জরুরি। কপ২৯ এ তহবিল আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। এ তহবিল তৈরির জন্য আমাদের অনেক শক্তিশালী হয়ে কাজ করতে হবে।’

সমাবেশ আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রথম সারিতে। জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ নামের এমন আয়োজন পৃথিবীতে এটাই প্রথম। আমরা বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো এটি আয়োজন করছি। এ আয়োজনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অংশগ্রহণই সবচেয়ে বেশি। তারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’

তারা ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কাইনান হগটন বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যে জ্বালানি নীতি গ্রহণ করছে, তা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তরিত হতে হবে। এর জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে। আমরা এ জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশে যুক্ত থাকতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। সমাবেশের সাফল্য কামনা করছি।’ এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক, সিপিআরডির চিফ এক্সিকিউটিভ মো. শামসুদ্দোহা, সিআরইএসএলের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম প্রমুখ।

Related Articles

Back to top button