মোহামেডানের সাফল্যে সাবেকদের উচ্ছ্বাস

অনলাইন ডেস্ক: মতিঝিল পাড়ায় ঐতিহ্যের গল্প নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিছু ক্লাব। যার একটি মোহামেডান। ঢাকার ফুটবলে একসময় অন্যতম সেরা ক্লাব ছিল এটি। কিন্তু ২০০২ সালে লিগ শিরোপা জেতার পর যেন তাদের গল্প থমকে গিয়েছিল। পুনর্জন্ম হয়নি ২০০৬ সালে দেশে শুরু হওয়া পেশাদার লিগেও। কয়েকবার রানার্সআপ হলেও ছুঁয়ে দেখা হয়নি সোনালি ট্রফিটা।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো মোহামেডানের। পেশাদার লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে সোনালি ট্রফি ঘরে তুলতে যাচ্ছে তারা। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত মোহামেডানের সাবেক ফুটবলাররা।
কায়সার হামিদ, সাবেক ডিফেন্ডার
আমার প্রিয় ক্লাব। আমার অস্তিত্ব, আমার অন্যতম ঠিকানা মোহামেডান ক্লাব। এত বছর মুখিয়ে ছিলাম ক্লাবে একটি ট্রফি আসবে। দীর্ঘ ২৩ বছর পর অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। ২০০২ সালের পর লিগের একটি ট্রফি এলো। খুব ভালো লাগছে। লিগ ট্রফি তো আগেই ছিল, পেশাদার লিগের ট্রফিটা প্রয়োজন ছিল। আসলে সাদা-কালো ক্লাবটির অনেক দুঃসময় যাচ্ছিল। এই ট্রফিটা সেই দুঃসময় ঘুচিয়ে দেবে আশা করি। একসময় শিরোপা ছাড়া কিছুই ভাবতাম না আমরা। রানার্সআপ ট্রফিও আমাদের কাছে বাজে লাগত। এত বছর পর কাঙ্ক্ষিত সেই ট্রফি পেলাম। এবার ক্লাবটি ঘুরে দাঁড়াবে। অনেকে মনে করছিল মোহামেডান হারিয়ে যাবে। এই ট্রফিই প্রমাণ করে, ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি হারিয়ে যায়নি। যুগ যুগ জিও মোহামেডান।
ছাইদ হাছান কানন, সাবেক গোলকিপার
মোহামেডান ক্লাবে খেলেছি। এই ক্লাবের ইট-পাথর, মাটি আর ঘাসের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক আমার। সাদা-কালো ক্লাবটিকে কখনো ভুলিনি ভুলবও না। ক্যারিয়ারের কত সময় যে এই ক্লাব টেন্টে কাটিয়েছি, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। কত আড্ডা। সেই ক্লাবটির এমন অর্জন আমাকে আবেগতাড়িত করে। ২০০২ সালে সবশেষ লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছিল মোহামেডান।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর আরেকটি লিগ শিরোপা এলো। আর পেশাদার লিগের প্রথম শিরোপা। আসলে প্রথম তিন আসরে রানার্সআপ হওয়া মোহামেডানের উচিত ছিল আগেই এই শিরোপা জেতা। হয়নি নানা কারণে। আমার ভালোবাসার ক্লাবটির এমন অর্জনে আমি খুবই আনন্দিত। তিন ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা জেতাটা আমার আনন্দে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। আশা করি আগামীতেও এমন সাফল্য ধরে রাখবে ক্লাবটি।
কাজী জসিম উদ্দিন আহমেদ জোসি, সাবেক রাইট উইঙ্গার
আলহামদুলিল্লাহ, দীর্ঘ দিন পর প্রিয় ক্লাবে লিগ শিরোপা এসেছে। এজন্য আমরা সবাই আনন্দিত, গর্বিত। আমাদের কাছে পরম পাওয়া ছিল পেশাদার লিগের এই শিরোপাটি। সাদা-কালো ক্লাবটি এক থেকে দুইয়ে নেমে যেতে পারে তা কখনো ভাবিনি। সেই ধারাবাহিকতা আমরা ভুলেই যাচ্ছিলাম দীর্ঘ সময় শিরোপাখরায়। এতদিন পর মোহামেডান আবার জানান দিল, সেরা ক্লাব এটি। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে আগামী বছরও শক্তিশালী দল গঠন করতে হবে। এজন্য প্রচুর আর্থিক সহযোগিতা দরকার। অর্থের সংস্থান করতে হবে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। মানসম্মত খেলোয়াড় সংগ্রহ করতে হবে। তবেই শিরোপা ধরে রাখা যাবে।
জাহিদ হাসান এমিলি, সাবেক ফরোয়ার্ড
ছোটবেলা থেকেই মোহামেডানের সমর্থক ছিলাম। ক্যারিয়ারে আবাহনীতে খেললেও সাদা-কালোদের প্রতি ছিল অকুণ্ঠ সমর্থন। সেই ক্লাবটি পেশাদার লিগের কাঙ্ক্ষিত শিরোপা জিতেছে, খুব ভালো লাগছে। আগে অনেকবার রানার্সআপ হলেও এই ট্রফিটা অধরাই ছিল। আমার মনে আছে, ২০০৯-১০ মৌসুমে অপরাজিত রানার্সআপ হয়েছিলাম। কোটি টাকার সুপার কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।
কিন্তু সোনালি ট্রফি আনতে পারিনি, যা এবার স্থানীয় ও বিদেশি খেলোয়াড়রা মিলে এনেছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার সমর্থকদের জন্য। এই সাফল্য ধরে রাখতে হলে অনেক পরিকল্পনা করতে হবে ক্লাবটিকে। কারণ একবার চ্যাম্পিয়ন হলে পরের বছর সমর্থকদের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। মোহামেডান আরও এগিয়ে যাক, এই কামনাই করি সব সময়।