মেজর এম.এ জলিলকে বীর উত্তম খেতাব ফিরিয়ে দিতে হবে : মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বরিশাল বিমানবন্দর তার নামে নামকরণের দাবি’
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, ইতিহাসের এক কালজয়ী ব্যক্তিত্ব ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এম.এ জলিল। তাকে তাঁর মরণোত্তর বীর উত্তম খেতাব ফিরিয়ে দিতে হবে। এটি রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে এই সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে বরিশালে ব্যাপক কর্মকা- পরিচালিত হয়। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ৯ মাস কারাবরণ করেন।
গতকাল ২৪ নভেম্বর রবিবার সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নীচতলার নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বরিশাল বিভাগ সমিতির উদ্যোগে “মুক্তিযুদ্ধের ৯ম সেক্টর কমান্ডার, বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) এম.এ জলিলের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী” উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল বিভাগ সমিতির সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন ফোরকান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। মেজর হাফিজ বলেন, তিনি জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। আমৃত্যু সংগ্রামী জীবন তাকে করেছিল প্রতিবাদী। জালিম ও লুটেরা শাসকের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয়। দেশপ্রেমিক হিসেবে তিনি সারা বাংলার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। আর সেটিই তার জীবনে কাল হয়ে গিয়েছিল। এখন সময় এসেছে তাকে মূল্যায়ন করার। বরিশাল বিমানবন্দর তার নামে করা উচিত। এছাড়াও যারা জীবনে মুক্তিযুদ্ধ করেনি তাদের নামে কী করে ক্যান্টনমেন্ট হয়? বরিশাল বিভাগে তাদের নামে যা কিছু আছে সবকিছু বাতিল করে দিতে হবে। কোন ব্যক্তির নামে ক্যান্টনমেন্ট হতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৫৩ বছরের রাজনীতিতে কেউ পালিয়ে যায়নি। কিন্তু ফ্যাসিবাদী হাসিনা এদেশে গুম, খুন, হত্যার রাজনীতি করার কারণে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দুপুরে নিজের খাবারটাও খেতে পারেননি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা বিশ্বাস করি, তারা আগামী ৬ মাসের মধ্যে জাতিকে একটি নির্বাচন উপহার দেবে। সেই নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, আমরা তাদেরকে সাদরে গ্রহণ করবো। সেখানে সবার ভোটের অধিকার থাকবে। গণতন্ত্র থাকবে, মানবাধিকার থাকবে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বরিশালবাসী বিভিন্ন সময়ে নিজেরা অনৈক্য থাকেন। আর এ কারণে বরিশালের কোন অর্জন হয় না। এখন সময় এসেছে নিজেদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করা। সকল ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করার। আমার জীবনের
প্রথম সময় বরিশাল জিলা স্কুলে কেটেছে। আমি সেখান থেকে এসএসসি পাস করেছি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি ১৫০ বছরের পুরানো হলেও আমরা একটি অনুষ্ঠান করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের মধ্যে কত প্রকার বিভেদ রয়েছে। এখন বিভেদের সময় নেই, এগিয়ে যাওয়ার সময়। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি’র সহ সভাপতি সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবদীন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড. মজিবর রহমান সরোয়ার, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। বক্তব্য রাখেন সংগঠন এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন রেজা, নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন ভূইয়া, কামাল উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, খালেদা খানম, জহিরুল আলম ইকবাল। অনুষ্ঠান শেষে মেজর এম.এ জলিলের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

Related Articles

Back to top button