অ্যান্টার্কটিকায় সমুদ্রের তলদেশে ফাটল, বের হচ্ছে বিপজ্জনক মিথেন গ্যাস

অনলাইন ডেস্ক: অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের সমুদ্রতলের ফাটল থেকে বুদ্বুদের মতো করে বের হচ্ছে উচ্চহারে মিথেন গ্যাস—এমনই উদ্বেগজনক তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের মতে, অ্যান্টার্কটিকার উত্তর উপকূলীয় রস সাগরের তলদেশে এমন গ্যাস নিঃসরণ ঘটছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বের সমুদ্রতলে মিথেন গ্যাসের বিশাল ভাণ্ডার থাকলেও অ্যান্টার্কটিকার বরফমুক্ত উপকূলীয় এলাকায় এই গ্যাসের উপস্থিতি নতুন করে চিন্তার জন্ম দিয়েছে।
শিপবোর্ড ওয়াটার কলাম অ্যাকুস্টিক সার্ভে ও রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল (আরওভি)-এর সাহায্যে বিজ্ঞানীরা উত্তর ভিক্টোরিয়া ল্যান্ড ও ম্যাকমার্ডো সাউন্ড-এর অগভীর উপকূলীয় অঞ্চলে অসংখ্য স্থানে মিথেন গ্যাস নির্গমনের ঘটনা শনাক্ত করেছেন।
গবেষণা বলছে, “বরফের চাপ কমে যাওয়ায় হিমবাহের নিচে থাকা হাইড্রেট ভাণ্ডারের ওপর পানির চাপও কমে যায়, ফলে সেই অঞ্চল থেকে মিথেন গ্যাস বের হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।”
এছাড়াও, বরফমুক্ত অঞ্চলে সংরক্ষিত গ্রিনহাউস গ্যাসও পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন গবেষকেরা।
জলবায়ু গবেষক সারা সিব্রুক জানিয়েছেন, “মহাসাগর ও উপকূলরেখা থেকেই সবচেয়ে বেশি মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। বায়ুমণ্ডলে থাকা মিথেনের মোট পরিমাণের সঙ্গে নির্গত গ্যাসের পরিমাণের মধ্যে বড় একটি ফারাক রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব জায়গা থেকে হাইড্রোকার্বন-সমৃদ্ধ তরল চুইয়ে বের হয়, সেসব এলাকায় মিথেন নিঃসরণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।”
কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?
মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই–অক্সাইডের চেয়ে প্রায় ৮০ গুণ বেশি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস।
অ্যান্টার্কটিকার মতো সংবেদনশীল অঞ্চলে এ ধরনের গ্যাস নিঃসরণ জলবায়ু সংকটকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
গ্যাস নিঃসরণ বাড়লে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক উষ্ণতা আরও তীব্র হতে পারে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যান্টার্কটিকায় মিথেন গ্যাস নির্গমন সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
সূত্র: এবিসি




