খরচ কমলেও সাড়া নেই হজযাত্রায়

অনলাইন ডেস্ক: এবার কমেছে হজের ব্যয়। তবে হজযাত্রায় আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। মক্কা ও মদিনায় কাবা ও মসজিদে নববির কাছে বা দূরে থাকার ভিত্তিতে সরকারিভাবে দুটি ও বেসরকারিভাবে আরও দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সব প্যাকেজ মিলিয়ে এ বছরের চেয়ে আগামী বছর হজের খরচ কমেছে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাথমিক নিবন্ধন হয়েছে ৩০ হাজার। নিবন্ধন চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। কিন্তু এ পর্যন্ত কোটার মাত্র ২৩ শতাংশ পূরণ হয়েছে।

প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয় গত ১ সেপ্টেম্বর। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ১ লাখ ১৭ হাজার যেতে পারবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৪ হাজার ৫৫ জন। বেসরকারিভাবে হজে যেতে চান ২৬ হাজার ২১২ জন। চলতি বছর হজে গিয়েছিলেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। কোটার প্রায় ৩৩ শতাংশ খালি ছিল। আগামী বছর কোটার অর্ধেকই খালি থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ৩০ অক্টোবর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে। ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর চলতি বছরের প্যাকেজ-১ এর চেয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ১৪৫ টাকা কম খরচ হবে। অন্য প্যাকেজে (প্যাকেজ-২) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এ হিসাব খাবার খরচ ছাড়া।

সরকার বেসরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা (খাবার খরচ ছাড়া) নির্ধারণ করে দিয়েছে। সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি বিশেষ প্যাকেজও ঘোষণা করতে পারবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

সাড়া কম নানা কারণে

হজ এজেন্সির মালিক ও সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের টাকা বেশি ধরা হয়েছে।

হজের এখনও ছয় মাস বাকি। এত আগে অনেকেরই টাকা গোছানো নেই। কিন্তু গত বছর থেকে এবার হজের প্রস্তুতির কার্যক্রম আগেই করতে হচ্ছে। তাই অনেকেই না বোঝার কারণে ঠিকমতো প্রস্তুতি নিতে পারছেন না। এ ছাড়া সরকার পতনের কারণে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট অনেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন বলে মনে করছেন তারা। কেউ আবার ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছেন না।

এদিকে ৩০ নভেম্বরের পর প্রাথমিক নিবন্ধনের কোনো সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। হাবের বাতিল হওয়া কমিটির মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার সমকালকে বলেন, ‘প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য যে টাকা এবার ধরা হয়েছে, তা বেশি। এত আগে এমন প্রস্তুতি মানুষের থাকে না। অন্য বছর বিমান ভাড়ার টাকা দিয়েই প্রাথমিক নিবন্ধন করা যেত।’

গোল্ডেন বেঙ্গল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলের মালিক ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, সরকার পরিবর্তন হওয়ার কারণে একটি শ্রেণির হাতে টাকা থাকলেও চাপে আছে। তাদের অনেকে এবার হজে যাওয়ার নিয়ত থাকলেও হয়তো পারছেন না। এ ছাড়া গ্রামের লোকজন বলছেন, একসঙ্গে দেওয়ার মতো এত টাকা এখন নেই।’

‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকবৃন্দ’-এর সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, নতুন করে কোনো কৌশল অবলম্বন করা না হলে এবার হজযাত্রী ৫০ হাজারের বেশি হয়তো হবে না।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক সমকালকে বলেন, প্রাথমিক নিবন্ধনের টাকা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। তবে যে টাকা নেওয়া হচ্ছে, তা শুধু বাংলাদেশ প্রান্তের খরচের জন্য নয়। বাড়ি ভাড়াসহ সৌদি আরবে খরচের একটা অংশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠাতে হয়। ওই টাকা সময়মতো পাঠাতে না পারলে সেখানকার কাজ পিছিয়ে যাবে।

Related Articles

Back to top button