রহমতুল্লাহ স্কুলে দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে লালবাগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর লালবাগ রহমতুল্লাহ মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের দুর্নীতিবাজ পদত্যাগী অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তারকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়ন ও প্রতিষ্ঠানে হল বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
ঢাকার লালবাগ রহমতুল্লাহ মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে পতন হওয়া আওয়ামী স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর হাজী সেলিমের একান্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠানে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছিলেন। স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকগণ আজ (২৪ নভেম্বর) এক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে জানান, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন। এ ছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করে টাকা আত্মসাৎ করেন। সাবেক অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তারের নানা অনিয়ম তুলে ধরে তারা।
এরআগে বিগত দুই মাস পূর্বে ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে রহমতুল্লাহ মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার তার পদত্যাগপত্রে লিখেন, আমি নিন্মে স্বাক্ষরকারী অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। অথচ তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের জন্য নির্ধারিত বাসায় দীর্ঘ দুই মাস অবস্থান করছেন। বার বার বর্তমান পরিচালনা কমিটি ও দায়িত্বরত শিক্ষকদের তাগাদা প্রদান সত্ত্বেও তিনি বাসা ছেড়ে যাননি। আজ সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ মুখে তার অপসারণ দাবি করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার একপর্যায়ে দীর্ঘ ৪ ঘন্টা পরে পুলিশ প্রশাসনের সম্মুখে তিনি অধ্যক্ষর বাসা থেকে বের হয়ে যান।
আজ সকালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কথা শুনে তাতে যোগ দেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের একই অভিযোগ, তারা জানান বিদ্যালয়ে অনিয়মের বিষয়ে কোনো কিছু জানালে সেটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার পেশিশক্তি ব্যবহার করে দমিয়ে রাখত। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর আশেপাশে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এছাড়াও নানা অনিয়মের বিষয়ে অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন ছুড়ে দেন এবং কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে দ্রুত স্কুল অধ্যক্ষর বাসা ছাড়তে বলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার স্কুলের দায়িত্ব থাকাকালীন অবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম করে গেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে ভুল করে তা টাকার বিনিময়ে সংশোধন করতেন। দীর্ঘদিনের স্কুলের হিসাব তিনি কর্তৃপক্ষকে দেননি। এছাড়া আরও বিভিন্ন অভিযোগে ইউএনও এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ‘চোর হটাও, স্কুল বাচাও, আমাদের বিদ্যাপীঠে কোনো দুর্নীতিবাজ, অর্থলোভী, ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলকারীর জায়গা নেই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।