হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

অনলাইন ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে হামাস এখনো এই দাবি নিশ্চিত করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
গতকাল রোববার (৩১ আগস্ট) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) একটি পোস্টে সেনাবাহিনী (আইডিএফ) এবং নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতকে ‘ত্রুটিহীন অভিযান’ পরিচালনার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন যে, আবু ওবায়দার সহযোগীরাও তাদের লক্ষ্যবস্তু হবে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার আল-রিমাল এলাকার একটি ছয়তলা ভবনে পাঁচটি নির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ওই ফ্ল্যাটটি একটি দাঁতের চেম্বার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর বিপুল অঙ্কের টাকা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এই টাকার বেশিরভাগ হামাসের সদস্যরা সংগ্রহ করে।
হামাসের দাবি, এই হামলায় একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং অন্তত সাতজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি কমাতে নিখুঁত অস্ত্র, আকাশ থেকে নজরদারি এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
আবু ওবায়দা সবসময় মুখোশ পরে বক্তব্য দিতেন এবং তিনি হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর থেকে তিনি একাধিকবার ইসরায়েলবিরোধী দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন। সর্বশেষ শুক্রবারের ভাষণে তিনি গাজা সিটিতে আক্রমণের পরিণতি নিয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিলেন।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা চলতি মাসের শুরুতে গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। জাতিসংঘ এই পদক্ষেপকে বিধ্বংসী পরিণতির ঝুঁকি বলে সতর্ক করেছে এবং যুক্তরাজ্যের ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতও একে একটি বড় ভুল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক সমালোচনা উপেক্ষা করে হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে গাজা সিটিতে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বাস। তাদের ৯০ শতাংশেরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, পয়োনিষ্কাশন এবং খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ শহরটিতে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে।