বাংলাদেশ-আফগানিস্তান প্রথম ওয়ানডে আজ
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সময়টা ভালো যাচ্ছেনা। ভারতের সফরে সিরিজ হারের পর ঘরের মাঠেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এবার বাংলাদেশের সামনে আফগানিস্তান চ্যালেঞ্জ। আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নাজমুল হোসেন শান্তরা এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
মূলত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির লক্ষ্য সামনে রেখে আয়োজিত হচ্ছে এই সিরিজ। এই সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিনটি ওয়ানডে আছে বাংলাদেশের। অর্থাৎ আগামী ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে মোট ৬টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। তারই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক-মিরাজরা। তিন ম্যাচে ওয়ানডে সিরিজের আজ প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়। নতুন কোচ ফিল সিমন্সের অধীনে বাংলাদেশের প্রথম সফর এটি। ঘরের মাঠে টেস্ট ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ধবলধোলাই হয়েছে বাংলাদেশ। সিমন্সের তাই নিজেকে প্রমাণেরও সুযোগ এটি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১৬ ম্যাচে। জয়ের পাল্লা ভারী শান্তদের পক্ষে। ১০ ম্যাচে শেষ হাসি বাংলাদেশের। সর্বশেষ পাঁচ দেখার তিনটিতেই জিতেছে তারা। যদিও, একদিনের ক্রিকেটে এক বছরের বেশি সময় আগে শেষবার মাঠে নেমেছিল দুদল। বাংলাদেশের যেখানে আত্মবিশ্বাসের অভাব, আফগানদের সেখানে ভরপুর প্রত্যয়। গত সেপ্টেম্বরে শারজাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জিতেছেন রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীরা। মাঠের ক্রিকেটে যেমন আত্মবিশ্বাসের কমতি, তেমনি বাংলাদেশের জন্য কঠিন আরও একটি জায়গা। আফগানদের হাতের তালুর মতো চেনা শারজার এই মাঠ। সেখানেই কি না লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ওয়ানডে খেলতে নামছে প্রায় ২৯ বছর পর।
১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিল শারজায়। এই মাঠে অবশ্য তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে দলটি। তবে, ২০২২ সালের এশিয়া কাপে (টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত) এখানে খেলা শেষ ম্যাচে এই আফগানদের কাছেই হেরেছিল বাংলাদেশ। সেদিক বিবেচনায় সিরিজ শুরুর আগে অনেক দিক থেকেই ব্যাকফুটে শান্ত বাহিনী। যদিও আফগানদের বিপক্ষে অভিজ্ঞতা বিবেচনায় এগিয়ে বাংলাদেশ দল। কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম, দলের দারুণ পরিবেশ ও আমিরাতের কন্ডিশনে এগিয়ে থাকবে আফগানরা। বাংলাদেশ দলের জন্য বড় ধাক্কা হয়েছে এসেছে বাঁ-হাতি লেগ স্পিনার নাসুম আহমেদ ও পেসার নাহিদ রানার ভিসা না পাওয়া। প্রথমবার ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়া নাহিদের অভাব অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম পূরণ করে দিতে পারবেন।
কিন্তু শারজাহর স্পিন সহায়ক উইকেটে নাসুমের অভাব ভোগাতে পারে দলকে। সাকিব আল হাসান না থাকায় দলের একমাত্র বাঁ-হাতি স্পিনার তিনি। স্পিন তীর্থে তাকে তাই দলের দরকার ছিল। নাসুম প্রথম ম্যাচে খেলতে না পারায় মেহেদী মিরাজ ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে নিতে হবে স্পিন আক্রমণ সামলানোর ভার। অন্য দিকে আফগান শিবিরে আছেন তরুণ-অভিজ্ঞ মিলিয়ে দারুণ স্পিন আক্রমণ। মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খানের সঙ্গে তরুণ লেগ স্পিনার নুর আলী ও অফ স্পিনার গাজনফার আছেন দলে। ব্যাটিংয়ের দারুণ ছন্দে আছে আফগানরা। রহমানুল্লাহ গুরবাজ রানে আছেন। ইমার্জিং এশিয়া কাপ মাতিয়ে এসেছেন সাদিকুল্লাহ আতাল। পেসার ফজল হক, ফরিদ মালিকের সঙ্গে দলে এসেছেন বিলাল সামি। বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে গত মার্চে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ওই সিরিজে অবশ্য জিতেছে বাংলাদেশ। তবে ৭ মাসের বেশি সময় পর মাঠে নামায় কিছুটা জড়তা নাজমুল শান্তর দলে থাকবে। অসুস্থতার কারণে লিটন দাস না থাকয় টপ অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে যাচ্ছে দলের। শারজাহ’র উইকেটে সাকিবকে নিশ্চয় মিস করবে দল। সম্প্রতি আফগানরা আমিরাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওয়ানডে হারিয়েছে। সব মিলিয়ে কিছুটা এগিয়েই থাকবে স্বাগতিকরা।
আফগান সিরিজে বাংলাদেশের স্কোয়াড : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।