জুমার নামাজের সময় বায়তুল মোকাররমে হাতাহাতি, ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক: বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় তুলকালাম হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের নিয়োগ করা খতিব মাওলানা রুহুল আমিনের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি এবং জুতা ছোড়াছুড়ি হয়। এ সময় ভাঙা হয় মসজিদের কাচ। এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
২০১৮ সালের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী মাওলানা রুহুল আমিন ২০২২ সালে জাতীয় মসজিদের খতিব হিসেবে নিয়োগ পান। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর তিনি মসজিদে আসেননি। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে ৪ সেপ্টেম্বর তিনি অসুস্থতার কথা জানিয়ে ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেন।
খতিবের অনুপস্থিতিতে দুই কর্মকর্তা এবং দুই ইমামকে জুমার নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দিয়েছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বায়তুল মোকাররমে আসেন মাওলানা রুহুল আমিন। সে সময় খতিবের কার্যালয়ে ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। ৩১ আগস্ট জারি করা অফিস আদেশ অনুযায়ী, গতকালের জুমায় তাঁর ইমামতি করার নির্দেশনা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাওলানা রহুল আমিন খতিবের কার্যালয়ে গিয়ে জুমায় ইমামতি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু এ সময় কয়েকজন তাঁকে বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি নামাজ পড়াতে পারবেন না।
গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা রুহুল আমিন সমকালকে বলেছেন, ‘ধর্ম সচিবকে জানিয়ে বায়তুল মোকাররমে গিয়েছিলাম। সরকার আমাকে মসজিদে যেতে মানা করেনি। কিন্তু কয়েকজন ব্যক্তি মুসল্লি কমিটির নামে এসে বলেন, আপনি ইমামতি করতে পারবেন না। এর পর মিম্বারের পাশে যাই। তখনও আজান হয়নি। কিন্তু এর আগেই বয়ান শুরু করেন আবু ছালেহ পাটোয়ারী। এতে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ইমামতি করতে বলেন। আমি মিম্বারে গেলে পেছনের কাতার থেকে হট্টগোল শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে কয়েকজন আমাকে বের করে নিয়ে আসেন।’
তবে রুহুল আমিনের বিরোধীরা বলেছেন, তিনি হাজারখানেক অনুগত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিয়ে বায়তুল মোকাররমে যান। যারা নামাজের আগেই সামনের কয়েক কাতারে বসে পড়েন। রুহুল আমিন মিম্বারে দাঁড়ালে পেছনের মুসল্লিরা প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে তিনি আবু ছালেহ পাটোয়ারীর হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে নেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে জুতা ছোড়াছুড়ি এবং হাতাহাতি হয়। রুহুল আমিন বেরিয়ে গেলে আবু ছালেহ পাটোয়ারী ইমামতি করেন।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী বলেছেন, মসজিদের ভেতরে সমস্যা হয়েছে। বাইরে কিছু হয়নি।