রাজধানীতে ধর্ষণের অভিযোগে দুই তরুণকে পিটিয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় ধর্ষণের অভিযোগে দুই তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দুই তরুণকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতরা হলেন- সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০) ও সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯)।

জানা যায়, নিহত সাইদ আরাফাত শরীফ ও সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন বেশ কিছুদিন ধরে সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন।

সাইদকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্কাউট সদস্য সম্রাট শেখ জানান, ব্যাপক মারধরের শিকার ৩ ছাত্রকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজন মিলে যাত্রাবাড়ী থানায় দিয়ে যায়। থানায় তারা ছটফট করছিল। তখন জানা যায়, সায়দাবাদ এলাকায় কোনো হোটেলে তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আস্তে আস্তে তাদের অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, নিহত ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার জানান, ইয়াসিন ১৫ দিন ধরে সেচ্ছাসেবক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছিল। মঙ্গলবার সকালে সে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর বউবাজারের বাসা থেকে বের হন। এরপর বহুবার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তার। বুধবার ভোর ৪টার দিকেও মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। তখনও তিনি সুস্থ স্বাভাবিক আছেন বলে জানান মাকে। এরপর সকালে কেউ একজন তার মাকে ফোন করে জানান, তার ছেলের অবস্থা ভালো না, দ্রুত যাত্রাবাড়ী থানায় আসতে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় গিয়ে ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান।

তিনি বলেন, থানা থেকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেয়ার সময় আমার ছেলে কথা বলতে পারছিল। বলছিল, ওদেরকে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে। ওরা কোনো অপরাধ করেনি। এরপর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় ইয়াসিন।

জানা যায়, ইয়াসিনের বাবার নাম সাখাওয়াত হোসেন। ধলপুর বউ বাজার এলাকায় থাকেন তারা। কুতুবখালি এলাকার একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন তিনি।

আর নিহত সাইদের মানিব্যাগে থাকা এনআইডি কার্ড থেকে তার নাম পরিচয় জানা যায়। তার বাবার নাম কবির হোসেন ও মা মরিয়ম। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কদমিরচর গ্রামে। বর্তমানে যাত্রাবাড়ীর টনি টাওয়ার এলাকায় থাকতেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে গণধোলাইয়ের শিকার দুই যুবককে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আমরা জানতে পেরেছি ধর্ষণের অভিযোগে এই দুই যুবককে গণধোলাই দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button