সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ঐক্যের বদলে বিভক্তি আনতে পারে: তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা দেশে জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখার জন্য সব রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন,
“বিশ্বের কিছু দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা থাকলেও বাংলাদেশের ভূগোল, রাজনীতি ও বাস্তবতায় এটি কতটা উপযোগী, তা ভেবে দেখা দরকার। এই ব্যবস্থা জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভক্তিমূলক সমাজ ও অস্থিতিশীল সরকার তৈরি করতে পারে।”
তিনি সতর্ক করেন, এই ব্যবস্থার আড়ালে “পরাজিত পলাতক ফ্যাসিস্ট অপশক্তি” পুনর্বাসিত হওয়ার পথ খুলে যেতে পারে। তাই সকল রাজনৈতিক দলকে ভাবনার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনায় ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারেক বলেন, ‘গুম-খুন, অপহরণ, মামলা, হামলা, জেল—কিছুই আমাদের আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারেনি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপি কর্মীসহ হাজারো মানুষ শহীদ হয়েছেন। তারেক বলেন, ‘এই মানুষগুলো কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জীবন দিয়েছেন।’ তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে শহীদদের স্মরণে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নামকরণ করা হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘সব ইস্যুতে সব দলের ঐকমত হওয়া জরুরি নয়, কিন্তু জাতীয় স্বার্থে একতা অপরিহার্য। ৫ আগস্টের আন্দোলন ছিল তার জ্বলন্ত উদাহরণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে, এবার আর ভুল করা যাবে না। শহীদদের ঋণ শোধের সময় এখনই।’
বিএনপির শীর্ষ নেতা জানান, ‘অন্তর্বর্তী সরকার একটি জবাবদিহিমূলক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করছে। এই সরকারই রাজনৈতিক সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট শক্তির বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতের সরকার অব্যাহত রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাব ভালো হলেও সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে উপযুক্ত কিনা, তা রাজনৈতিক দলগুলোর বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’
তারেক বলেন, ‘বিএনপি চায় এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, যেখানে ক্ষমতার কেন্দ্র হবে জনগণ। তারা স্থানীয় থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত নিজ নিজ প্রতিনিধি বেছে নেবে ‘ তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে নির্ধারিত মেয়াদের পর তাদের পরিবর্তন করার ক্ষমতাও জনগণের থাকবে। এতে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের প্রবণতা কমবে।’
তারেক রহমান সব রাজনৈতিক নেতার প্রতি বলেন,
“ইচ্ছামতো শর্ত না বাড়িয়ে আসুন শহীদদের চেতনাকে ধারণ করি। প্রতিশোধ নয়, বরং আলোর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্রের আলোয় ফিরুক বাংলাদেশ।”