আমার বাবার হত্যাকারীদের বাঁচাতে তদবির হচ্ছে

নিজস্ব  প্রতিবেদক: আমার বাবার হত্যাকারীদের বাঁচাতে অনেক বড় জায়গা থেকে তদবির হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। বুধবার (১২ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সামনে এই দাবি করেন তিনি। ডরিন বলেন, আমি শুনেছি, অপরাধীদের বাঁচাতে অনেক জায়গা থেকে তদবির করা হচ্ছে। তাদের যেন ছেড়ে দেওয়া হয়, সেজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো তদবিরের চাপে পড়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে বন্ধ করার চেষ্টা না করা হয়, চাপের মুখে যাতে সঠিক তদন্ত বন্ধ করা না হয়, সেই দাবি জানিয়েছি। আমি যেন সঠিক বিচার পাই। সেটাই বলেছি।

আনারের মেয়ে আরও বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরইমধ্যে অনেককে আটক করা হয়েছে। অপরাধীদের বাঁচাতে অনেক জায়গা থেকে তদবির করা হচ্ছে। তাদের যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, গিয়াস বাবু নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বাবার প্রতিপক্ষ নয়। আমাদের সাথে তার কোনো শত্রুতাও নেই। আমার মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে। গত মাসের ১৭ তারিখে তার সঙ্গে ভাঙায় দেখা হয়েছে। সেখানে একটা টাকা দেওয়ার লেনদেনের কথা উঠেছে, যা আমি খবরে শুনেছি। আমার কথা হলো, এ টাকার যোগানদাতা কে? কেন তারা এটা করিয়েছি? আপনারা দেখেছেন, তাকে আটকের আগে থানায় তিনি জিডি করেছেন যে, তার তিনটি ফোন হারিয়ে গেছে। একইদিনে একজন মানুষের তিনটি ফোন কীভাবে হারিয়ে যায়, সেটাও আমার প্রশ্ন। এগুলো কী পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে, সে তো আমার বাবার শত্রু না। এই কাজগুলো কে করাচ্ছে, সেটা আমি বারবার বলেছি।

ডরিন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- আইন, বিচার সব নিজস্ব গতিতেই চলবে। অপরাধীরা পার পাবে না। আমি বিশ্বাস করি, অপরাধীদের তিল পরিমাণ ছাড় দেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তদন্তের শুরুর দিকে চোরাচালানের কারণে হত্যাকাণ্ড হতে পারে এমন বিষয় সামনে আসে। তবে এখন সেটি মোড় নিয়েছে রাজনীতির দিকে। নিহতের পরিবারেরও দাবি, রাজনৈতিক বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামাল গিয়াস বাবুসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহ তাদের। ইতোমধ্যে তাদের আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় আরও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। তথ্যপ্রমাণে সাপেক্ষে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে তাদের। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে নিউটাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এরপরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতের পুলিশের বরাত দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

Related Articles

Back to top button