রাফার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বর্বর হামলা, নিহত ৩৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুতদের শেষ আশ্রয়স্থল গাজার রাফাহ শহরে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে। সোমবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রাফায় বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে ইসরায়েল ভয়াবহ হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তাদের বিমান বাহিনী রাফাহতে হামাসের একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। হামলাটি ‘নিয়ন্ত্রিত বোমা ও সুনির্দিষ্ট বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে’ পরিচালনা করা হয়েছে। আইডিএফের দাবি, এই হামলায় হামাসের পশ্চিম তীরের প্রধান কর্মকর্তা ও ইসরায়েলিদের উপর মারাত্মক হামলায় জড়িত আরেক সিনিয়র হামাস কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী স্বীকার করেছে, হামলার ফলে ওই এলাকার বেসামরিক লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেছেন, হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং আরও ডজন খানেক আহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিম রাফার তেল আল-সুলতান পাড়ায় ইসরায়েলি হামলার এই ঘটনাটি ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগে রাফাহ শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী স্থল অভিযান শুরু করার পরে হাজার হাজার মানুষ সেখান থেকে পালিয়ে তেল আল-সুলতান পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। রেড ক্রসের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি বলেছে, রাফাতে তাদের ফিল্ড হাসপাতাল প্রচুর হতাহতের সংখ্যা পাচ্ছে এবং অন্যান্য হাসপাতালগুলোও প্রচুর সংখ্যক রোগী নিচ্ছে। হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রাফাতে হামলাকে একটি ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন তিনি। রাফা শহরের কুয়েতি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাঁবু পুড়ে গেছে, তাঁবু গলে গেছে, অনেক মানুষের শরীর গলে গেছে।’

গত শুক্রবার জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত রাফাহ শহরে হামলা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রেখেছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সাত মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ৩৫ হাজার ৯৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৮০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

Related Articles

Back to top button