রাষ্ট্রের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন ঢাবি অধ্যাপক কার্জন

অনলাইন ডেস্ক: ‘আইনজীবী নিয়োগ করতে না দেওয়া, থানায় ও জেলখানায় ফ্যান ও সাবানের অভাব, সারা রাত ঘুমাতে না পারার’সহ নানান দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে সংবিধানের ৩৩তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রের কাছে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন এই অধ্যাপক।

গতকাল শুক্রবার (২৯ আগস্ট) শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আদালতে তোলা হলে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তাদের এজলাসে তুলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান সবাইকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানিতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শামসুদ্দোহা সুমন কারাগারে আটক রাখার জোর দাবি জানান।

কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় আসামি অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আপনি অনুমতি দিলে কিছু কথা বলতে চাই।’

আদালত অনুমতি দিলে তিনি তার হাতে থাকা সংবিধানের বই উঁচু করে বিচারককে বলেন, ‘আমাদের সাথে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সংবিধানের আর্টিকেল ৩৩ অনুসারে যে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তা দেওয়া হয় নাই। আমাদের আইনজীবী নিয়োগ করতে দেয়া হয় নাই। আমি একজন শিক্ষক। থানায় জেলখানায় একটা ফ্যান ছিল না, সাবান ছিল না। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আমরা ভিক্টিম। সারা পৃথিবীতে ভাইরাল হয়েছে এটা। পিপি যা বলেছে সব মিথ্যা। আমি এর প্রতিকার চাই। আমাদের যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চাই। আর এখনই জামিন দিবেন।’

সাবেক এ অধ্যাপক বলেন, ‘গতকাল ১০টায় ডিআরইউতে যে প্রোগ্রাম ছিল সেটা আহ্বায়ক জহিরুল হক পান্না, তাকে আপনারা চেনেন-জানেন। আর ওই মঞ্চের সদস্যসচিব একজন বীর মুক্তিযুদ্ধো, ড. কামাল হোসেনের সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল। আমি সেখানে আলোচক হিসেবে ছিলাম। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়। তখন একদল সন্ত্রাসী ঢুকে মব করে আমাদের তুলে দেয়। আমরা ভিকটিম। যারা অপরাধী তাদের গ্রেপ্তার না করে আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

পরে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক কার্জনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক।

শুনানি শেষে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষক কার্জন আদালত চত্বরে সংবিধানের বই উঁচু করে সবাইকে দেখান। আর বলেন, ‘এই সংবিধান ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে। এটা রক্ষা করতে হবে।’

Related Articles

Back to top button