ঘুষের হাট ঢাকার সমাজসেবা অফিস !ডিডি রকনুল হকের হাতে বন্ধি সরকারের সমাজসেবা
বিশেষ প্রতিবেদন : সরকারের জন হিতোষী কাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠান সমাজসেবা অধিদপ্তর। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার অন্যতম অগ্রাধিকার খাত – সমাজের পিছিয়ে পড়া নিপীড়িত নির্যাতিত বিশাল জনগোষ্ঠিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেবা নিশ্চিত করা। সরকার ইতিমধ্যেই প্রায় ৫ কোটি জনগোষ্ঠিকে সমাজকল্যাণের আওতায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু সরকারের সকল জনসেবা মূখি কর্মকান্ডকে চরমভাবে বিতর্কিত করছে কতিপয় দূর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা। এমন শত শত অভিযোগ ঢাকা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রকনুল হকের বিরুদ্ধে। শত অভিযোগের পরও তার বদলী বা কোন তদন্ত না হওয়ায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এবং প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যের হাট বসিয়েছেন তেজগাঁওস্থ সমাজসেবা অফিসে।
সরকারের সমাজকল্যাণ কর্মসূচি তথা বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের উন্নয়ন, ভিক্ষুকদের পুর্ণবাসন সহ প্রায় অর্ধশত কর্মসূচির আওতায় ৫ কোটি জনগণকে সেবা দিয়েছেন সরকার গত ১৫ বছরে যার অধিকাংশই সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে। এসব কর্মসূচির কোন সুফল মিলছেনা বিনা ঘুষে ঢাকা জেলা সমাজসেবা অফিসে। প্রতিদিন শত শত ভূক্তভোগীর নিরব কান্না চলছে এ অফিসে। ডিডি রকনুল হকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে একটা দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট প্রকাশ্যে ঘুষের হাট পরিচালনা করছে এবং বিভিন্ন কায়দা কানুন করে সরকারের কোটি কোটি টাকা তসরুপ করছে।
ডিডি রকনুল হকের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা পড়লেও সদ্য সাবেক মন্ত্রীর আশির্বাদে কোন অভিযোগের সুরাহা হয়নি। ঘুষেরও লুটের পাকায় তিনি তৎকালিন মন্ত্রী ও তার দপ্তরকে ম্যানেজ রেখেছেন। সমাজকল্যাণের তালিকাভূক্ত প্রায় ১,৫০০ সংগঠন রয়েছে ঢাকা জেলার অধীনে। এ সব সংগঠন গঠনতন্ত্র বা সরকারী নিয়ম মেনে চলার কথা থাকলেও অবৈধ পরিচালনার কারণে শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে ডিডি অফিসে। ডিডি রকনুল হক বাদী বিবাদী উভয়পক্ষ থেকেই লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে এসব অভিযোগের কোন সুরাহা না করে বৎসরের পর বৎসর ঝুলিয়ে রাখেন। ফলে অভিযোগ কারী পক্ষ সমূহ আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এমন প্রায় ২০০ মামলা চলছে ঢাকার আদালতে যেখানে সরকারের লাখ লাখ টাকার লোকসান হচ্ছে শুধু দুর্নীতিবাজ ডিডি রকনুল হকের কারণে।
ঢাকাস্থ নাঙ্গলকোট উপজেলা সমিতির কমিটি হয়েছে রাতের অন্ধকারে যেখানে কোন নিয়মকানুন মানা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা দেন সংক্ষুব্ধরা। ডিডি একটি তদন্ত কমিটি করেন এডি সালমা বেগমের নেতৃত্বে। এরপর ডিডি বাদী পক্ষের নিকট ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করলে তারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে গত ৭ মাসে এ তদন্তের আলোর মুখ দেখেনি। এমন শতশত অভিযোগ ডিডি রকনুল হকের বিরুদ্ধে।
ঢাকা জেলা সমাজসেবা অফিসের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন ডিডি রকনুল হক সবসময়ই লোভনীয় স্থানে চাকুরী করে ডিজি ও মন্ত্রীর দপ্তর ম্যানেজ করে রাখেন। কোটি কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যের একটা বড় অংশ বিতরণ করে সবার মূখে বন্ধ রাখেন। ঘুষের টাকায় ডিডি রকনুল ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বাড়ী , প্রায় ডজন খানেক দামী ফ্ল্যাট ছাড়াও গাজীপুরে বিশাল আয়তনের বাগানবাড়ী গড়ে তুলেছেন বলে সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এসব অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য তার মোবাইলে বহুবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।