পদকপ্রাপ্তিতে জয়জয়কার এসপি-ওসিদের
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪। পুলিশ সপ্তাহকে ঘিরে একগুচ্ছ দাবি-দাওয়া পুলিশ সদস্যদের। তবে এরই মধ্যে বড় দাবি পূরণ হয়েছে তাদের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় পুরস্কার পাচ্ছেন তারা। পুলিশ সপ্তাহের ইতিহাসে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক পদক দেওয়া হচ্ছে। এবার পদক পাবেন ৪০০ পুলিশ সদস্য।পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় সব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা থাকলেও জয়জয়কার এসপি এবং ওসিদের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী-অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা প্রদর্শন, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের জন্য পদক দেওয়া হচ্ছে। তবে পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপহার দেওয়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে এবার সরকারের কাছে অধিক সংখ্যক পদক দেওয়ার দাবি জানানো হয়। পুলিশ সদর দপ্তরকে সব জেলার এসপিসহ ৫০০ পুলিশ সদস্যকে পদক দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই তালিকা যাচাই করে ৪০০ জনকে পদক দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় বৃহস্পতিবার।
সূত্র মতে, এবারের আগে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদক দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। ওই বছরও পদক দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়। ওই সময় ৩৪৯ জনকে পদক দেওয়া হয়। ২০২১ থেকে ২০২৩- এই তিন বছর বিপিএম ও পিপিএম পদক দেওয়া হয় ১৫টি করে। ২০১৯ সালে এই পদকের সংখ্যা ছিল ১১৮টি। এছাড়া ২০১৭ সালে ১৮২, ২০১৬ সালে ১৩২, ২০১৫ সালে ১০২, ২০১৪ সালে ৮৬, ২০১৩ সালে ২০ এবং ২০১২ সালে ৪০ জন পুলিশ সদস্যকে এই পদক দেওয়া হয়।
এবার অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশের ৩৫ সদস্যকে বিপিএম ও ৬০ জনকে পিপিএম পদক দেওয়া হচ্ছে। আর গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের জন্য ৮৫ জনকে বিপিএম-সেবা, ২১০ জনকে পিপিএম-সেবা পদক দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনের কর্মসূচি প্যারেডে সালাম গ্রহণের পর নিজ হাতে পুলিশ সদস্যদের পদকে ভূষিত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের পুলিশ সপ্তাহে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদক দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুলিশ সদস্যরা সারা বছর অনেক কাজ করেন। যারা ভালো কাজ করেন তারা পুরস্কার পান। আর যারা খারাপ কাজ করেন তারা শাস্তি পান। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসাবেই প্রতিবছর পুলিশ সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের হাতে পুরস্কার হিসাবে পদক তুলে দেওয়া হয়। এবারও দেওয়া হবে। এটা একটি রুটিন কাজ। এখানে নির্বাচনের কোনো বিষয় নেই।
পদকের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এবার যে ৩৫ জনকে বিপিএম পদক দেওয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে মরণোত্তর পদক পাবেন ছয়জন। এদের মধ্যে আছেন ডিএমপির প্রয়াত অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতিময় সরকার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মরহুম জালাল উদ্দীন আহম্মদ, র্যাব-৬ এর মরহুম করপোরাল আনিচুর রহমান ও কনস্টেবল ফারুক হোসেন, হাইওয়ে পুলিশের মরহুম কনস্টেবল মোমিনুল ইসলাম ও সিটিটিসির কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম।
আরো যারা বিপিএম পদকে ভূষিত হচ্ছেন তারা হলেন- র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, র্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক কর্নেল মাহবুব আলম র্যাব সদর দপ্তরের লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফিরোজ কবির, মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম, র্যাব-১৪ এর সহঅধিনায়ক সাইফুজ্জামান, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা, নোয়াখালী সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, ডিএসপি উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আবুল হাসান, সিলেট জালালাবাদ থানার এএসআই আহসান কবির, কনস্টেবল বিলাল উদ্দিন, ডিএমপি প্রটেকশন বিভাগের নায়েক আব্দুর রাজ্জাক, রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী খান, মতিঝিল থানার কনস্টেবল মাহাফুজার রহমান, মেহেরপুরের গাংনী ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের কনস্টেবল তানভীর আহম্মেদ, মানিকগঞ্জ থানার কনস্টেবল রাকিব মিয়া, মাগুরা সদর থানার কনস্টেবল রাকিব হাসান, ডিএমপি পিওএম উত্তর বিভাগের কনস্টেবল জাহিদ হাসান হৃদয়, আবু তালেব, হাবিবুর রহমান নয়ন এবং গাজীপুর পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল ফুয়াদ হোসেন।
যারা পিপিএম পদক পাচ্ছেন তাদের মধ্যে উলেখযোগ্য হলেন, ডিএমপির উপকমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জিয়াউল আহসান তালুকদার, সিটিটিসির উপকমিশনার জসীম উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান, ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নুরুল আমীন, অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আনিচ উদ্দীন, ডিএমপি বিমানবন্দর থানার ওসি আরাফাত খান, শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ, মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঞা প্রমুখ।
বিপিএম-সেবা পদকে যাদের ভূষিত করা হচ্ছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, অতিরিক্ত আইজিপি মাজহারুল ইসলাম, ডিআইজি শাহ আলম, ডিআইজি তৌফিক মাহবুব চৌধুরী, হায়দার আলী খান, আব্দুল বাতেন, ডিআইজি মো. হারুন-অর-রশীদ, মুনিবুর রহমান, শেখ রেজাউল হায়দার, বিপ্লব বিজয় তালুকদার, অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক, র্যাব-১২ এর অধিনায়ক মো. মারুফ হোসেন, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সরকার মোহাম্মদ কায়সার, ডিএমপির উপকমিশনার আবু ইউসুফ, গাজীপুরের এসপি কাজী শফিকুল আলম, মৌলভীবাজারের এসপি মনজুর রহমান, ময়মনসিংহের এসপি মাছুর আহাম্মদ ভূঞা, মানিকগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপি ছাইদুল হাসান, জয়পুরহাটের এসপি মোহাম্মদ নূরে আলম, ঢাকার এসপি মো. আসাদুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, কিশোরগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ, ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, ডিএমপি ডিবির উপকমিশনার তারেক আহমেদ, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা প্রমুখ।
যারা পিপিএম-সেবা পদক পাচ্ছেন তাদের মধ্যে উলেখযোগ্য হলেন-ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন, জামিল হাসান, ডিএমপির উপকমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) রিফাত রহমান শামীম, ডিএমপির উপকমিশনার কাজী আশরাফুল আজীম, জমীম উদ্দিন মোল্লা, চট্টগ্রামের এসপি এসএম শফিউল্লাহ, দিনাজপুরের এসপি শাহ ইফতেখার আহমেদ, মুন্সীগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ আসলাম খান, রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আবু মারুফ হোসেন, লক্ষ্মীপুরের এসপি মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, চাঁদপুরের এসপি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নওগাঁর এসপি মুহাম্মদ রাশিদুল হক, লালমনিরহাটের এসপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নেত্রকোনার এসপি ফয়েজ আহমেদ, ডিএমপির উপকমিশনার আকরামুল হোসেন, সিলেটের এসপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোপালগঞ্জের এসপি আল-বেলি অফিফা, বরগুনার এসপি আব্দুস ছালাম, ফেনীর এসপি জাকির হাসান, খুলনার এসপি মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, গাইবান্ধার এসপি কামাল হোসেন, ঠাকুরগাঁওয়ের এসপি উত্তম প্রসাদ পাঠক, বাগেরহাটের এসপি আবুল হাসনাত খান, রাজবাড়ীর এসপি জিএম আবুল কালাম আজাদ, শরীয়তপুরের এসপি মাহবুবুল আলম, কুড়িগ্রামের এসপি আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, পঞ্চগড়ের এসপি এসএম সিরাজুল হুদা, ঝালকাঠির এসপি মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল, রাজশাহীর এসপি সাইফুর রহমান, এসএসএফের সহকারী পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদ, পিরোজপুর সদর থানার ওসি আসিকুজ্জামান, সাভার মডেল থানার ওসি আকবর আলী খান, খুলনা থানার ওসি কামাল হোসেন খান, বরিশাল কোতোয়ালি থানার ওসি এটিএম আরিচুল হক প্রমুখ।
আরও যেসব থানার ওসি পিপিএম সেবা পদক পাচ্ছেন তাদের মধ্যে অছেন দিনাজপুরের ফরিদ হোসেন, মৌলভীবাজারের কেএম নজরুল, ভোলার এনামুল হক, কুলাউরার মোহাম্মদ আলী মাহমুদ, চট্টগ্রাম কোতোয়ালির এসএম ওবায়েদুল হক, রায়পুরার আজিজুর রহমান, বোয়ালিয়া মডেল থানার হুমায়ুন কবির, শেরেবাংলানগর থানার উৎপল বড়ুয়া, চান্দিনার আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ, চান্দগাঁও থানার জাহিদুল কবির, তেরখাদা থানার সরদার মোশারফ হোসেন, মনোহরদীর আবুল কাশেম ভূইয়া, শ্রীপুরের শাহজামান, ঝিনাইদহ সদর থানার শাহীন উদ্দিন, কুমিল্লা কোতোয়ালির ফিরোজ হোসেন, শার্শা থানার মনিরুজ্জামান, নীলফামারীর তানভীরুল ইসলাম, বদলগাছির মাহবুবুর রহমান, সুন্দরগঞ্জের মাহবুব আলম, গঙ্গাচড়ার দুলাল হোসেন, কোনাবাড়ীর মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম, টঙ্গী পূর্ব থানার মুস্তাফিজুর রহমান, টুঙ্গিপাড়ার খন্দকার আমিনুর রহমান, রাজারহাটের মেস্তাফিজুর রহমান, পীরগঞ্জের আনোয়ারুল ইসলাম, বেলকুচির আনিছুর রহমান, গাবতলীর আবুল কালাম আজাদ, কুষ্টিয়ার মিরপুরের মোস্তফা হাবিবুল্লাহ, চুয়াডাঙ্গা সদরের শেখ সেকেন্দার আলী, মাধবপুরের রকিবুল ইসলাম খান, বাগেরহাট সদরের সাইদুর রহমান, আশুগঞ্জের নাহিদ আহাম্মেদ, মীরসরাইয়ের কবির হোসেন, রংপুর কোতোয়ালির মোন্তাছির বিল্লাহ, পতেঙ্গার কবিরুল ইসলাম, গলাচিপার ফেরদৌস আলম খান, পেকুয়ার মোহাম্মদ হায়দার, আদিতমারীর মোজাম্মেল হক, গোয়াইনঘাটের রফিকুল ইসলাম, গৌরীপুরের সুমন চন্দ্র রায়, কেন্দুয়ার এনামুল হক, ইসলামপুরের সুমন তালুকদার, হিজলার জুবাইর, ভংগার মামুনুর রশিদ, পাকুন্দিার আসাদুজ্জামান টিটু, খুলশীর রুবেল হাওলাদার প্রমুখ।